নিজ বিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদান্ডপ্রাপ্ত রাঙামাটির লংগদুর করল্যাছড়ি আর এস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিমকে চাকরী হতে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও যাবজ্জীবন সাজা বহাল রাখার দাবিতে রাঙামাটিতে মানববন্ধন করেছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার সকালে রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সচেতন শিক্ষার্থীদের ব্যানারে প্রায় ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধনে লংগদু উপজেলা থেকে শিক্ষার্থী,অভিভাবকসহ বিভিন্ন মহলের সচেতন নাগরিকরাও অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে দীপন চাকমা সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার কমশিনের সাবেক সদস্য নিরূপা দেওয়ান,লংগদুর স্থানীয় অভিভাবক এরিক চাকমা, সাবেক শিক্ষার্থী জিকো চাকমা , কল্যাণ প্রিয় চাকমাসহ অন্যান্য প্রমুখ।
মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে বক্তারা বলেন ,‘বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জিয়াউর রহমানের সাথে যোগসাজশ করে আবারও প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন আসামী আব্দুর রহিম। এ অবস্থায় বিদ্যালয়ের সকল ছাত্রীরা অনিরাপত্তায় থাকতে হচ্ছে। নিজ বিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধর্ষণ দায়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত হওয়া আব্দুর রহিম শিক্ষক নামের কলংক। আসামি আব্দুর রহিমকে দ্রুত প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে বহিষ্কার করে যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত রায় কার্যকরের দাবি জানান বক্তারা।’
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর রাঙামাটির লংগদু উপজেলার করল্যাছড়িতে ১৬বছর বয়সী এক স্কুলছাত্রী ছাগল খুঁজতে বের হলে করল্যাছড়ি আর এস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুর রহিম তাকে লেবু দেওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে স্কুলের ছাত্রাবাসে ধর্ষণ করেন। সে সময়ে স্কুলের ছাত্রাবাসে কেউ ছিল না। বিষয়টি কাউকে না জানাতে হুমকি দিতে থাকেন ওই শিক্ষক। পরবর্তীতে ঘটনার ৯ দিন পর ৫ অক্টোবর স্কুলছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে লংগদু থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর আব্দুর রহিমকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড দিয়ে রাঙামাটির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ ই এম ইসমাইল হোসেন রায় দেন। একইসঙ্গে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়। এরপর রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপীল করে তিন মাসের জামিনে বের হন এই প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম।