মুক্তি পেল চাকমা ভাষার স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র পোড়া কবাল্লে
চাকমা জনগোষ্ঠীর সমাজে নারী নিযার্তন, মদ্যপানের বিভিন্ন অসঙ্গতি ও চাকরির কারণে প্রেমিকাকে হারানোসহ বিভিন্ন দিক তুলে ধরে নির্মিত হওয়া চাকমা ভাষার স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘পোড়া কবাল্লে’ আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার রাঙামাটির ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটে স্থানীয় সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘হিলর ভালেদী ও হিলর প্রোডাকশন’ তাদের ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে পদার্ উন্মোচন এবং হিলর প্রোডাকশন নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শুভমুক্তি প্রদান করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা।
শুক্রবার সকালে হিলর ভালেদী ও হিলর প্রোডাকশন সংগঠনের আয়োজেন নৃত্য প্রতিযোগিতা, অভিনয় প্রতিযোগিতা, সংগঠনের একক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী উৎসবসহ বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন পালিত হয়। বিকেলে রাঙামাটি সদর উপজেলা সংলগ্ন এলাকা থেকে ঘুরে রাঙামাটির ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটে আনন্দ শোভাযাত্রা করা হয়। পরে চলচ্চিত্র উৎসবে ‘পোড়া কপাল্লে’ চাকমা ভাষার স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের আনুষ্ঠানিক পর্দা উন্মোচন, সংগঠনটির কর্মকান্ডের ওপর নির্মিত প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন, কেক কাটা, পুরস্কার বিতরণী ও সন্ধ্যায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বিকালে অনুষ্ঠিত পুরস্কার বিতরণী ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও দৈনিক বাংলা,নিউজ বাংলার রাঙামাটি প্রতিনিধি সুপ্রিয় চাকমা শুভর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শিশির চাকমা, সংগঠনটির প্রধান উপদেষ্টা ও রাঙামাটি রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সুশীল প্রসাদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনটির সম্পাদক ইমন চাকমা। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বিজ্ঞান্তর তালুকদার এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সাংবাদিক সৈকত রঞ্জন চৌধুরী।
চলচ্চিত্রে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করা সুমন চাকমা ও জেনি চাকমা বলেন,‘পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত চাকমা জনগোষ্ঠীর সমাজে বিভিন্ন অসঙ্গতি বিষয়গুলো তুলে ধরতে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেচেন নির্মাতা। আশা রাখি দর্শকের মন জয় করবে। তবে এভাবে আরো চাকমা ভাষার স্বল্পদৈর্ঘ্য নিমার্ণ করা প্রয়োজন।’
অন্যদিকে এ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি শেষ চলচ্চিত্র নিমার্ণের কথা জানান তরুণ চলচ্চিত্র নিমার্তা সুপ্রিয় চাকমা শুভ। তিনি আক্ষেপ করে বলেন,‘ পার্বত্য চুক্তির ধারাতে বলা হয়েছে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক বিকাশ প্রচার ও প্রসারে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতার কথা। কিন্তু জেলা পরিষদ,পার্বত্য চট্টগাম উন্নয়ন বোর্ডসহ কোনো প্রতিষ্ঠানই পৃষ্ঠপোষকতা করে না। নিজের টাকায় নিমার্ণ করা হয়েছে পোড়া কবাল্লে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি। সুতরাং পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির কোনো বিকল্প নেই। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি যথাযথ বাস্তবায়ন হলো আমরাও সাংস্কৃতিক অঙ্গণে পৃষ্ঠপোষকতা পেতে পারি। পোড়া কবাল্লে এর বাংলা অর্থ “পোড়া কপাল” ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা বলেন, ‘হিলর প্রোডাকশনের মাধ্যেমে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর ভাষায় স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করা প্রয়োজন। পার্বত্য চট্টগ্রামে সাংস্কৃতিক উন্নয়ন ও বিকাশে যারা নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড তাদের সহায়তার পাশে থাকবে।